প্রকাশিত: Sun, Feb 4, 2024 12:15 PM
আপডেট: Wed, Apr 30, 2025 12:31 AM

[১]বিরোধী শিবিরে হতাশা, বিএনপিতে শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতায় চাপা ক্ষোভ [২]আসছে নতুন যুগপৎ কর্মসূচি

শাহানুজ্জামান টিটু: [৩] দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সরকারের পদত্যাগ, নিবার্চন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধসহ নানা ধরনের জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। ১০ বিভাগে সমাবেশের পর ধাপে ধাপে এই কর্মসূচিকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের একদফা দাবিতে পরিণত করে সরকারবিরোধী দলগুলো। কিন্তু ব্যাপক দমন পীড়নের মুখে সেই আন্দোলন সফল হয়নি। বিরোধী দলের শীর্ষনেতাদের কারাগারে রেখে সরকার নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস ও আমির খসরুর মত শীর্ষ নেতারা কারাগারে। তারা কবে কারামুক্ত হবেন তাও অনিশ্চিত। 

[৪] রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচন পরবর্তীতে সরকারবিরোধী শিবিরে একধরনের হতাশার জন্ম নিয়েছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সব জায়গায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা, আগামীতে বিএনপি আদৌ সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে কিনা। দলের মধ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতা নিয়েও কানাঘুষা রয়েছে। 

[৫] হতাশায় নিমজ্জিত দলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে কালোপতাকা মিছিল করেছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে। কিন্তু কর্মসূচি নিয়ে ঢাকায় সেভাবে দাঁড়াতে না পারায় ঢাকায় দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা আবারো স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই।

[৬] বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত ইস্যুগুলোতে আন্দোলন ধরে রাখতে চায় বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো। তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে সমমনা দলগুলো।  কিন্তু সে আন্দোলন কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। 

[৭] রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিরোধী দলগুলো সাংগঠনিকভাবে কিছুটা অগোছালো অবস্থায় আছে। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অধিকাংশ নেতা কারারুদ্ধ। দেড় হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর সাজা হয়েছে। বিএনপির দাবি, তাদের প্রায় ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ২৮ অক্টোবরের পর থেকে কারাবন্দি। সেই সঙ্গে তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি মামলা রয়েছে। এমন অবস্থায় এই মুর্হুতে নতুন করে সরকারবিরোধী শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

[৮] কিন্তু বিএনপি এসব বিষয়ে আমলে নিতে চায় না। দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক মনে করেন, স্বৈরাচাররা ক্ষমতায় থাকার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে। তারা রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। কিন্তু এটা সম্ভব নয়। 

[৮.১] তিনি বলেন, আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষমতা নাই যে, বিএনপিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে পারে। আওয়ামী লীগ নিজেরাও সেটা জানে। কারণ তাদের সাথে যে জনগণ নেই, তারা যে জনবিছিন্ন হয়ে পড়েছে; এটা আরো একবার প্রমাণিত হয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। 

[৯] ফারুক বলেন, ২৮ ও ৩০ জানুয়ারি কালোপতাকা মিছিলে দুই একটি ছাড়া সারাদেশে আর কোথাও পুলিশ বাধা দিতে পারেনি। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। এটা থেকে প্রমাণিত বিএনপির নেতাকর্মীরা নিরাশ বা হতাগ্রস্ত নয়। তারা উজীবিত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। 

[১০] আন্দোলন ধরে রাখার বিষয়ে আশাবাদী বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়নি। মানুষ তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ফলে কর্মসূচিগুলো থাকা মানে আমরা যে মানুষের পাশে আছি বা তাদের সাথে আছি এটা নিশ্চিত করা। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা আজকে কিছু করবো এবং কালকেই ফল পেয়ে যাবো এটা তো নাও হতে পারে। একটা কথা পরিস্কার, আমাদের দাবি যদি ন্যায্য হয় জনগণের দাবি হয় তাহলে একটা সময় তা অর্জিত হবেই। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব